স্বদেশ ডেস্ক:
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয়করণের দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু করেছেন। ‘বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোট’-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় তিন-চারশ শিক্ষক-কর্মচারী এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
গতকাল রবিবার অবস্থান কর্মসূচিস্থলে এ শিক্ষক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিউর রহমান জানান, বাংলাদেশে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে গত ২০১৮ সালে ১৮ দিন ও ২০১৯ সালে ৫৬ দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। ওই সময়ে একজন শিক্ষক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এছাড়া দীর্ঘদিন বিনাবেতনে চাকরি করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিভিন্ন সময়ে অসুস্থ হয়ে সারাদেশে ১০ জন বেসরকারি শিক্ষক মারা গেছেন। সরকারের কাছে অন্যায় কোনো দাবি করছি না। আমাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি শিক্ষকদের কষ্টের কথা বুঝবেন।
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালের ২৭ মে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় বাংলাদেশে আর কোনো বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকবে না। কিন্তু এর আগের সময়ে থাকা বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন? তিনি বলেন, আমরা তো ওই ঘোষণার পরে কোনো বিদ্যালয়ের জাতীয়করণ চাচ্ছি না। আমাদের দাবি তো ন্যায্য। তাহলে এভাবে অসহায়ের মতো আমাদের রাখা হয়েছে কেন? দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। তিনি বলেন, আমরা খুবই খারাপ সময় পার করছি। কোনোভাবেই টিকে থাকতে পারছি না। এত কঠিন সময় শিক্ষকদের পার করতে হবে তা কোনোদিন ভাবিনি।
শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সবার পরিবার রয়েছে। এই পরিবার আমাদের চালাতে হয়। আমাদের সন্তানের কথা চিন্তা করে সরকারি বেতনভাতার ব্যবস্থা করেন। আমরা ছাত্রছাত্রীর মাঝে শিক্ষার আলো জ্বেলে গেলেও কষ্টের অন্ধকারের কথা বলতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রতি সদয় হোন।
আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা জানান, ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে, ২০১২ সালের ২৭ মের আগে আবেদন করা প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আসবে। এ প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সে সময় যোগ্যতা থাকায় জাতীয়করণের জন্য তৃতীয় ধাপে ৯৬০টি বিদ্যালয়ের বাইরে আরও চার হাজারের বেশি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য চাওয়া হয়। পরে ওই চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত হয়।